182
Mecca
The name is derived from the word was saaffat with which the Surah begins.
The subject matter and the style show that this Surah probably was sent down in the middle of the Makkan period, or perhaps in the last stage of the middle Makkan period. The style clearly indicates that antagonism is raging strong in the background and the Holy Prophet and his Companions are passing through very difficult and discouraging circumstances.
37:6
إِنَّا زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِزِينَةٍ ٱلْكَوَاكِبِ ٦
Indeed, We have adorned the nearest heaven with an adornment of stars
— Saheeh International
আমি নিকটবর্তী আকাশকে নক্ষত্ররাজির সুষমা দ্বারা সুশোভিত করেছি।
— Sheikh Mujibur Rahman
37:7
وَحِفْظًۭا مِّن كُلِّ شَيْطَـٰنٍۢ مَّارِدٍۢ ٧
And as protection against every rebellious devil
— Saheeh International
এবং রক্ষা করেছি প্রত্যেক বিদ্রোহী শাইতান হতে।
— Sheikh Mujibur Rahman
37:8
لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى ٱلْمَلَإِ ٱلْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍۢ ٨
[So] they may not listen to the exalted assembly [of angels] and are pelted from every side,[1]
— Saheeh International
[1]- By flaming meteors.
ফলে তারা উর্ধ্ব জগতের কিছু শ্রবণ করতে পারেনা এবং তাদের প্রতি উল্কা নিক্ষিপ্ত হয় সকল দিক হতে –
— Sheikh Mujibur Rahman
37:9
دُحُورًۭا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌۭ وَاصِبٌ ٩
Repelled; and for them is a constant punishment,
— Saheeh International
বিতাড়নের জন্য এবং তাদের জন্য রয়েছে অবিরাম শাস্তি।
— Sheikh Mujibur Rahman
37:10
إِلَّا مَنْ خَطِفَ ٱلْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُۥ شِهَابٌۭ ثَاقِبٌۭ ١٠
Except one who snatches [some words] by theft, but they are pursued by a burning flame, piercing [in brightness].
— Saheeh International
তবে কেহ হঠাৎ কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে।
— Sheikh Mujibur Rahman
The Adornment and Protection of the Heaven comes from Allah
Allah tells us that He has adorned the lowest heaven with the heavenly bodies for those among the people of the earth who look at it. The stars and planets in the sky give light to the people of earth, as Allah says:
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَآءَ الدُّنْيَا بِمَصَـبِيحَ وَجَعَلْنَـهَا رُجُوماً لِّلشَّيَـطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
(And indeed We have adorned the nearest heaven with lamps, and We have made such lamps (as) missiles to drive away the Shayatin, and have prepared for them the torment of the blazing Fire.) (67:5),
وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِى السَّمَاءِ بُرُوجًا وَزَيَّنَّـهَا لِلنَّـظِرِينَ - وَحَفِظْنَـهَا مِن كُلِّ شَيْطَـنٍ رَّجِيمٍ - إِلاَّ مَنِ اسْتَرَقَ السَّمْعَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ مُّبِينٌ
(And indeed, We have put the big stars in the heaven and We beautified it for the beholders. And We have guarded it from every outcast Shaytan. Except him who steals the hearing then he is pursued by a clear flaming fire.) (15:16-18). And Allah says here:
وَحِفْظاً
(And to guard) meaning, to protect as it should be protected,
مِّن كُلِّ شَيْطَـنٍ مَّارِدٍ
(against every rebellious Shaytan. ) means, every insolent and impudent devil, when he wants to eavesdrop (on news in the heavens), a piercing fire comes and burns him. Allah, may He be glorified, says:
لاَّ يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلإِ الاٌّعْلَى
(They cannot listen to the higher group) meaning, they cannot reach the higher group -- which refers to the heavens and the angels in them -- when they speak of what has been revealed by Allah of His Laws and decrees. We have already mentioned this when explaining the Hadiths quoted when we discussed the Ayah,
حَتَّى إِذَا فُزِّعَ عَن قُلُوبِهِمْ قَالُواْ مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ قَالُواْ الْحَقَّ وَهُوَ الْعَلِىُّ الْكَبِيرُ
(when fear is banished from their hearts, they say: "What is it that your Lord has said" They say: "The truth. And He is the Most High, the Most Great.) (34:23). Allah says:
وَيَقْذِفُونَ
(for they are pelted) meaning, they are hit,
مِن كُلِّ جَانِبٍ
(from every side.) means, from all directions from which they try to reach the heaven.
دُحُوراً
(Outcast,) means, they are rejected, and are repelled and prevented from reaching it, and they are pelted.
وَلَهُمْ عَذابٌ وَاصِبٌ
(and theirs is a constant torment.) means, in the Hereafter, they will have an ongoing, everlasting and painful torment, as Allah says:
وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
(and We have prepared for them the torment of the blazing Fire) (67:5).
إِلاَّ مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ
(Except such as snatch away something by stealing,) means, except for the one among the Shayatin who manages to get something, which is a word he has heard from the heaven. Then he throws it down to the one who is beneath him, who in turn throws it down to the one who is beneath him. Perhaps the flaming fire will strike him before he is able to throw it down, or perhaps he will throw it -- by the decree of Allah -- before the flaming fire strikes him and burns him. So the other devil takes it to the soothsayer, as we have seen previously in the Hadith. Allah says:
إِلاَّ مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ
(Except such as snatch away something by stealing, and they are pursued by a flaming fire of piercing brightness.) meaning, shining brightly. Ibn Jarir recorded that Ibn `Abbas, may Allah be pleased with him, said, "The Shayatin had places where they sat in the heavens listening to what was being revealed by Allah. The stars did not move and the Shayatin were not struck. When they heard the revelation, they would come down to earth and to every word they would add nine of their own. When the Messenger of Allah ﷺ was sent, if a Shaytan wanted to take his seat in the heavens, the flaming fire would come and would not miss him; it would burn him every time. They complained about this to Iblis, may Allah curse him, and he said, `Something must have happened.' He sent his troops out and they found the Messenger of Allah ﷺ standing in prayer between the two mountains of Nakhlah." -- Waki` said, "This means in the valley of Nakhlah." -- "They went back to Iblis and told him about that, and he said, `This is what has happened."'
৬-১০ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ্ তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, দুনিয়ার আকাশকে তারকামণ্ডলী দ্বারা তিনি সুশোভিত করেছেন। (আরবী) ও (আরবী) উভয়ভাবেই পড়া হয়েছে। উভয় অবস্থাতেই একই অর্থ হবে। আকাশের নক্ষত্ররাজি এবং ওর সূর্যের কিরণ যমীনকে আলোকোজ্জ্বল করে তুলে। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং ওগুলোকে করেছি শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি।” (৬৭:৫) আর এক জায়গায় বলেছেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি আকাশে রাশিচক্র বানিয়েছি এবং ওকে দর্শকদের চোখে সৌন্দর্যময় জিনিস করেছি। প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তান হতে ওকে রক্ষিত রেখেছি। যে কেউ কোন কথা চুরি করে শুনবার চেষ্টা করে তার পশ্চাদ্ধাবন করে এক তীক্ষ্ণ অগ্নিশিখা।” (১৫:১৬-১৮) মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি আসমানকে হিফাযত করেছি প্রত্যেক দুষ্ট ও উদ্ধত শয়তান হতে। ফলে তারা উধ্বজগতের কিছু শ্রবণ করতে পারে না। চুরি করে শুনবার চেষ্টা করলে এবং হঠাৎ কিছু শুনে ফেললে তাদেরকে তাড়ানোর জন্যে জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড তাদের পশ্চাদ্ধাবন করে। তারা আকাশ পর্যন্ত পৌঁছতেই পারে না।
আল্লাহ্ শরীয়ত ও তকদীর বিষয়ের কোন আলাপ-আলোচনা তারা শুনতেই পারে না। এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলো আমরা ... (আরবী) (৩৪:২৩) এই আয়াতের তাফসীরে বর্ণনা করে দিয়েছি।মহামহিমান্বিত আল্লাহ্ বলেনঃ যেই দিক থেকে তারা আকাশে উঠতে চায় সেই দিক থেকেই তাদের উপর অগ্নি নিক্ষেপ করা হয়। তাদেরকে বিতাড়িত ও লজ্জিত করার উদ্দেশ্যে বাধা দেয়া ও আসতে না দেয়ার জন্যে এই শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর তাদের জন্যে পরকালের স্থায়ী শাস্তি তো বাকী রয়েছেই যা হবে খুবই যন্ত্রণাদায়ক। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ্ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমি তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি।”(৬৭:৫)প্রবল প্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ হ্যা, তবে যদি কোন জ্বিন ফেরেশতাদের কোন কথা শুনে তার নীচের কাউকেও বলে দেয় তবে দ্বিতীয়জন তার নীচের অপরজনকে তা বলার পূর্বেই জ্বলন্ত অগ্নি তার পিছনে ধাবিত হয়। আর কখনো কখনো তারা সে কথা অপরের কানে পৌছিয়ে দিতে সক্ষম হয় এবং এ কথাই যাদুকররা বর্ণনা করে থাকে।(আরবী) শব্দের অর্থ অত্যন্ত তে এবং অত্যধিক উজ্জ্বল ও জ্যোতির্ময়। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, পূর্বে শয়তানরা আকাশে গিয়ে বসতো এবং অহী শুনতো। ঐ সময় তাদের উপর তারকা নিক্ষিপ্ত হতো না।
সেখানকার কথা নিয়ে তারা একের জায়গায় দশটি কথা বেশী করে বানিয়ে নিয়ে যাদুকরদেরকে বলে দিতো। অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) নবুওয়াত লাভ করলেন তখন তাদের আকাশে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। তখন থেকে তারা সেখানে গিয়ে কান পাতলে তাদের উপর অগ্নিশিখা নিক্ষিপ্ত হতো। যখন তারা এই নতুন ঘটনা অভিশপ্ত ইবলীসকে জানালো তখন সে বললোঃ “নতুন বিশেষ কোন জরুরী ব্যাপারে এরূপ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। সুতরাং সংবাদ জানার জন্যে সে তার দলবলকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলো। ঐ দলটি হিজাযের দিকে গেল। তারা দেখলো যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) নাখলার দু'টি পাহাড়ের মাঝে নামাযে রত আছেন। তারা এ খবর ইবলীস শয়তানকে জানালে সে বললোঃ “এই কারণেই তোমাদের আসমানে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে।” এর পূর্ণ বিবরণ ইনশাআল্লাহ্ নিম্নের আয়াতগুলোর তাফসীরে আসবে যেগুলোতে জ্বিনদের উক্তি উদ্ধৃত হয়েছ। আয়াতগুলো হলোঃ (আরবী) অর্থাৎ “এবং আমরা চেয়েছিলাম আকাশের তথ্য সংগ্রহ করতে; কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিণ্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ। আর পূর্বে আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শুনার জন্যে বসতাম, কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে তার উপর নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ডের সম্মুখীন হয়। আমরা জানি না যে, জগতবাসীর অমঙ্গলই অভিপ্রেত, না তাদের প্রতিপালক তাদের মঙ্গল চান।”(৭২:৮-১০)
(৮) হারূত ও মারূত ফেরেশতাদ্বয়ের কাহিনী
সুলায়মান (আঃ)-এর রাজত্বকালে বেঈমান জিনেরা লোকদের ধোঁকা দিত এই বলে যে, সুলায়মান জাদুর জোরে সবকিছু করেন। তিনি কোন নবী নন। শয়তানদের ভেল্কিবাজিতে বহু লোক বিভ্রান্ত হচ্ছিল। এমনকি শেষনবী (ছাঃ)-এর সময়েও যখন তিনি সুলায়মান (আঃ)-এর প্রশংসা করেন, তখন ইহুদী নেতারা বলেছিল, আশ্চর্যের বিষয় যে, মুহাম্মাদ সুলায়মানকে নবীদের মধ্যে শামিল করে হক ও বাতিলের মধ্যে সংমিশ্রণ ঘটাচ্ছেন। অথচ তিনি ছিলেন একজন জাদুকর মাত্র। কেননা স্বাভাবিকভাবে কোন মানুষ কি বায়ুর পিঠে সওয়ার হয়ে চলতে পারে? (ইবনু জারীর)।
এক্ষণে সুলায়মান (আঃ) যে সত্য নবী, তিনি যে জাদুকর নন, জনগণকে সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য এবং নবীগণের মু‘জেযা ও শয়তানদের জাদুর মধ্যে পার্থক্য বুঝাবার জন্য আল্লাহ পাক হারূত ও মারূত নামে দু’জন ফেরেশতাকে ‘বাবেল’ শহরে মানুষের বেশে পাঠিয়ে দেন। ‘বাবেল’ হ’ল ইরাকের একটি প্রাচীন নগরী, যা ঐসময় জাদু বিদ্যার কেন্দ্র ছিল। ফেরেশতাদ্বয় সেখানে এসে জাদুর স্বরূপ ও ভেল্কিবাজি সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে থাকেন এবং জাদুকরদের অনুসরণ থেকে বিরত হয়ে যেন সবাই সুলায়মানের নবুঅতের অনুসারী হয়, সেকথা বলতে লাগলেন।
জাদু ও মু‘জেযার পার্থক্য এই যে, জাদু প্রাকৃতিক কারণের অধীন। কারণ ব্যতীত জাদু সংঘটিত হয় না। কিন্তু দর্শক সে কারণ সম্পর্কে অবহিত থাকে না বলেই তাতে বিভ্রান্ত হয়। এমনকি কুফরীতে লিপ্ত হয় এবং ঐ জাদুকরকেই সকল ক্ষমতার মালিক বলে ধারণা করতে থাকে। আজকের যুগে ভিডিও চিত্রসহ হাযার মাইল দূরের ভাষণ ঘরে বসে শুনে এবং দেখে যেকোন অজ্ঞ লোকের পক্ষে নিঃসন্দেহে বিভ্রান্তিতে পড়া স্বাভাবিক। তেমনি সেযুগেও জাদুকরদের বিভিন্ন অলৌকিক বস্ত্ত দেখে অজ্ঞ মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়ত।
পক্ষান্তরে মু‘জেযা কোন প্রাকৃতিক কারণের অধীন নয়। বরং তা সরাসরি আল্লাহর নির্দেশে সম্পাদিত হয়। নবী ব্যতীত আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের প্রতি তাঁর ‘কারামত’ বা সম্মান প্রদর্শনের বিষয়টিও একইভাবে সম্পাদিত হয়। এতে প্রাকৃতিক কারণের যেমন কোন সম্পৃক্ততা নেই, তেমনি সম্মানিত ব্যক্তির নিজস্ব কোন ক্ষমতা বা হাত নেই। উভয় বস্ত্তর পার্থক্য বুঝার সহজ উপায় এই যে, মু‘জেযা কেবল নবীগণের মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়। যারা আল্লাহভীতি, উন্নত চরিত্র মাধুর্য এবং পবিত্র জীবন যাপন সহ সকল মানবিক গুণে সর্বকালে সকলের আদর্শ স্থানীয় হন।
আর নবী ও অলীগণের মধ্যে পার্থক্য এই যে, নবীগণ প্রকাশ্যে নবুঅতের দাবী করে থাকেন। কিন্তু অলীগণ কখনোই নিজেকে অলী বলে দাবী করেন না। অলীগণ সাধারণভাবে নেককার মানুষ। কিন্তু নবীগণ আল্লাহর বিশেষভাবে নির্বাচিত বান্দা, যাদেরকে তিনি নবুঅতের গুরুদায়িত্ব অর্পণ করে থাকেন। নবীগণের মু‘জেযা প্রকাশে তাদের নিজস্ব কোন ক্ষমতা বা কৃতিত্ব নেই। পক্ষান্তরে দুষ্ট লোকেরাই জাদুবিদ্যা শিখে ও তার মাধ্যমে নিজেদের দুনিয়া হাছিল করে থাকে। উভয়ের চরিত্র জনগণের মাঝে পরিষ্কারভাবে পার্থক্য সৃষ্টি করে।
বস্ত্ততঃ সুলায়মান (আঃ)-এর নবুঅতের সমর্থনেই আল্লাহ তাঁর বিশেষ অনুগ্রহে হারূত ও মারূত ফেরেশতাদ্বয়কে বাবেল শহরে পাঠিয়ে ছিলেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
وَاتَّبَعُوْا مَا تَتْلُوا الشَّيَاطِيْنُ عَلَى مُلْكِ سُلَيْمَانَ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَـكِنَّ الشَّيْاطِيْنَ كَفَرُوْا يُعَلِّمُوْنَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنْزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوْتَ وَمَارُوْتَ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى يَقُوْلاَ إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلاَ تَكْفُرْ فَيَتَعَلَّمُوْنَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُوْنَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ وَمَا هُمْ بِضَآرِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ بِإِذْنِ اللهِ وَيَتَعَلَّمُوْنَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلاَ يَنْفَعُهُمْ، وَلَقَدْ عَلِمُوْا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الآخِرَةِ مِنْ خَلاَقٍ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنْفُسَهُمْ لَوْ كَانُوْا يَعْلَمُوْنَ- وَلَوْ أَنَّهُمْ آمَنُوْا واتَّقَوْا لَمَثُوْبَةٌ مِّنْ عِنْدِ اللهِ خَيْرٌ، لَوْ كَانُوْا يَعْلَمُوْنَ- (البقرة ১০২-১০৩)-
‘(ইহুদী-নাছারাগণ) ঐ সবের অনুসরণ করে থাকে, যা সুলায়মানের রাজত্বকালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। অথচ সুলায়মান কুফরী করেননি, বরং শয়তানরাই কুফরী করেছিল। তারা মানুষকে জাদু বিদ্যা শিক্ষা দিত এবং বাবেল শহরে হারূত ও মারূত দুই ফেরেশতার উপরে যা নাযিল হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত। বস্ত্ততঃ তারা (হারূত-মারূত) উভয়ে একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা এসেছি পরীক্ষা স্বরূপ। কাজেই তুমি (জাদু শিখে) কাফির হয়ো না। কিন্তু তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যার দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। অথচ আল্লাহর আদেশ ব্যতীত তদ্বারা তারা কারু ক্ষতি করতে পারত না। লোকেরা তাদের কাছে শিখত ঐসব বস্ত্ত যা তাদের ক্ষতি করে এবং তাদের কোন উপকার করে না। তারা ভালভাবেই জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করবে, তার জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্মবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ, যদি তারা জানতো’। ‘যদি তারা ঈমান আনত ও আল্লাহভীরু হ’ত, তবে আল্লাহর কাছ থেকে উত্তম প্রতিদান পেত, যদি তারা জানত’ (বাক্বারাহ ২/১০২-১০৩)।
বলা বাহুল্য, সুলায়মান (আঃ)-কে জিন, বায়ু, পক্ষীকুল ও জীবজন্তুর উপরে একচ্ছত্র ক্ষমতা দান করা ছিল আল্লাহর এক মহা পরীক্ষা। শয়তান ও তাদের অনুসারী দুষ্ট লোকেরা সর্বদা এটাকে বস্ত্তবাদী দৃষ্টিতে দেখেছে এবং যুক্তিবাদের ধূম্রজালে পড়ে পথ হারিয়েছে। অথচ আল্লাহর নবী সুলায়মান (আঃ) সর্বদা আল্লাহর নে‘মতের শুকরিয়া আদায় করেছেন। আমরাও তার নবুঅতের প্রতি দ্বিধাহীনভাবে বিশ্বাস স্থাপন করি।
(৯) বায়তুল মুক্বাদ্দাস নির্মাণ ও সুলায়মান (আঃ)-এর মৃত্যুর বিস্ময়কর ঘটনা
বায়তুল মুক্বাদ্দাসের নির্মাণ সর্বপ্রথম ফেরেশতাদের মাধ্যমে অথবা আদম (আঃ)-এর কোন সন্তানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় কা‘বাগৃহ নির্মাণের চল্লিশ বছর পরে। অতঃপর স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে হযরত ইয়াকূব (আঃ) তা পুনর্নির্মাণ করেন। তার প্রায় হাযার বছর পরে দাঊদ (আঃ) তার পুনর্নির্মাণ শুরু করেন এবং সুলায়মান (আঃ)-এর হাতে তা সমাপ্ত হয়। কিন্তু মূল নির্মাণ কাজ শেষ হ’লেও আনুসঙ্গিক কিছু কাজ তখনও বাকী ছিল। এমন সময় হযরত সুলায়মানের মৃত্যুকাল ঘনিয়ে এল। এই কাজগুলি অবাধ্যতাপ্রবণ জিনদের উপরে ন্যস্ত ছিল। তারা হযরত সুলায়মানের ভয়ে কাজ করত। তারা তাঁর মৃত্যু সংবাদ জানতে পারলে কাজ ফেলে রেখে পালাতো। ফলে নির্মাণ কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যেত। তখন সুলায়মান (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে মৃত্যুর জন্যে প্রস্ত্তত হয়ে তাঁর কাঁচ নির্মিত মেহরাবে প্রবেশ করলেন। যাতে বাইরে থেকে ভিতরে সবকিছু দেখা যায়। তিনি বিধানানুযায়ী ইবাদতের উদ্দেশ্যে লাঠিতে ভর করে দাঁড়িয়ে গেলেন, যাতে রূহ বেরিয়ে যাবার পরেও লাঠিতে ভর দিয়ে দেহ স্বস্থানে দাঁড়িয়ে থাকে। সেটাই হ’ল। আল্লাহর হুকুমে তাঁর দেহ উক্ত লাঠিতে ভর করে এক বছর দাঁড়িয়ে থাকল। দেহ পচলো না, খসলো না বা পড়ে গেল না। জিনেরা ভয়ে কাছে যায়নি। ফলে তারা হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটে কাজ শেষ করে ফেলল। এভাবে কাজ সমাপ্ত হ’লে আল্লাহর হুকুমে কিছু উই পোকার সাহায্যে লাঠি ভেঙ্গে দেওয়া হয় এবং সুলায়মান (আঃ)-এর লাশ মাটিতে পড়ে যায়। উক্ত কথাগুলি আল্লাহ বলেন নিম্নোক্ত ভাবে-
فَلَمَّا قَضَيْنَا عَلَيْهِ الْمَوْتَ مَا دَلَّهُمْ عَلَى مَوْتِهِ إِلاَّ دَابَّةُ الْأَرْضِ تَأْكُلُ مِنْسَأَتَهُ فَلَمَّا خَرَّ تَبَيَّنَتِ الْجِنُّ أَن لَّوْ كَانُوْا يَعْلَمُوْنَ الْغَيْبَ مَا لَبِثُوْا فِي الْعَذَابِ الْمُهِيْنِ- (سبا ১৪)-
‘অতঃপর যখন আমরা সুলায়মানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুনপোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল। সুলায়মানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। অতঃপর যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, যদি তারা অদৃশ্য বিষয় জানতো, তাহ’লে তারা (মসজিদ নির্মাণের) এই হাড়ভাঙ্গা খাটুনির আযাবের মধ্যে আবদ্ধ থাকতো না’ (সাবা ৩৪/১৪)। সুলায়মানের মৃত্যুর এই ঘটনা আংশিক কুরআনের আলোচ্য আয়াতের এবং আংশিক ইবনে আববাস (রাঃ) প্রমুখ থেকে বর্ণিত হয়েছে (ইবনে কাছীর)।
সুলায়মানের এই অলৌকিক মৃত্যু কাহিনীর মধ্যে শিক্ষণীয় বিষয় সমূহ
(১) মৃত্যুর নির্ধারিত সময় উপস্থিত হ’লে নবী-রাসূল যে-ই হৌন না কেন, এক সেকেন্ড আগপিছ হবে না।
(২) আল্লাহ কোন মহান কাজ সম্পন্ন করতে চাইলে যেকোন উপায়ে তা সম্পন্ন করেন। এমনকি মৃত লাশের মাধ্যমেও করতে পারেন।
(৩) ইতিপূর্বে জিনেরা বিভিন্ন আগাম খবর এনে বলত যে, আমরা গায়েবের খবর জানি। অথচ চোখের সামনে মৃত্যুবরণকারী সুলায়মান (আঃ)-এর খবর তারা জানতে পারেনি এক বছরের মধ্যে। এতে তাদের অদৃশ্য জ্ঞানের দাবী অসার প্রমাণিত হয়।
সুলায়মান (আঃ)-এর জীবনী থেকে শিক্ষণীয় বিষয় সমূহ
১. নবুঅত ও খেলাফত একত্রে একই ব্যক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হওয়া সম্ভব।
২. ধর্মই রাজনীতির প্রধান চালিকা শক্তি। ধর্মীয় রাজনীতির মাধ্যমেই পৃথিবীতে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
৩. প্রকৃত মহান তিনিই, যিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হয়েও অহংকারী হন না। বরং সর্বদা আল্লাহর প্রতি বিনীত থাকেন।
৪. শত্রুমুক্ত কোন মানুষ দুনিয়াতে নেই। সুলায়মানের মত একচ্ছত্র এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী বাদশাহর বিরুদ্ধেও চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার চালানো হয়েছে।
৫. সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে প্রজাসাধারণের কাজ করলেও তারা অনেক সময় না বুঝে বিরোধিতা করে। যেমন বায়তুল মুক্বাদ্দাস মসজিদের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় আল্লাহ বাকী সময়ের জন্য সুলায়মানের প্রাণহীন দেহকে লাঠিতে ঠেস দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন জিন মিস্ত্রী ও জোগাড়েদের ভয় দেখানোর জন্য। যাতে তারা কাজ ফেলে রেখে চলে না যায় এবং নতুন চক্রান্তে লিপ্ত হবার সুযোগ না পায়।
সুলায়মানের মৃত্যু ও রাজত্বকাল
সুলায়মান (আঃ) ৫৩ বছর বেঁচেছিলেন। তন্মধ্যে ৪০ বছর তিনি রাজত্ব করেন। তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর পুত্র রাহবা‘আম (رحبعام) ১৭ বছর রাজত্ব করেন। অতঃপর বনু ইস্রাঈলের রাজত্ব বিভক্ত হয়ে যায়।[ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ২/২৯-৩০। ]